ইউসুফ আলী বাচ্চুঃ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কাজী আরেফ আহমেদের হত্যায় নেপথ্যে যারা রয়েছেন তাদের পরিচয় জানার দাবি উঠেছে। শনিবার বিকাল তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে কাজী আরেফ আহমেদের হত্যা দিবস উপলক্ষে কাজী আরেফ আহমেদ স্বারক বত্তব্য স্বারক বত্তব্য প্রদান অনুষ্ঠানে এই দাবি তোলেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, গন আদালতের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি মুনীর উদ্দীন আহমেদ, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হক প্রধান, কাজী আরেফ আহমেদের কন্যা কাজী আফরিন জাহান জুলি।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, কাজী আরেফ আহমেদ আমাদের বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অবিস্মরণীয় নাম। যদিও এ নামটি আজকের প্রজন্মের কাছে অচেনা এবং ব্যক্তিটিকে আজ অনেকেই চিনেন না। রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে আজ অনেকেই তাকে চিনলেও তা প্রকাশ করতে চান না।
স্বাধীনতা-পূর্ব কাজী আরেফ আহমেদ কে চিনতে বা জানতে হলে আমাদের নিউক্লিয়াসকে জানতে হবে নিউক্লিয়াস ছিল গোপন সংগঠন বেছে বেছে এর সদস্য করা হতো নিউক্লিয়াস এর অস্তিত্ব প্রমাণ হলে তাই যেতে হবে ছাত্রলীগের ইতিহাসে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কাজী আরিফ ভাই সম্পর্কে এটুকু বলা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্রীয় চরিত্রে যে কজন ছিলেন আরেফ ভাই ছিলেন তার অন্যতম। স্বাধীনতার পর প্রচন্ড সাহসের সাথে যারা নতুন রাষ্ট্রটিকে সঠিক ঠিকানায় পৌঁছাতে চেয়ে ছিলেন তাদের মাঝে আরেফ ভাই অন্যতম। একটি মানুষের জীবনে এটা নিশ্চয়ই বড় এক সফলতা।
বিপরীতে সঠিক ঠিকানায় জাসদ এবং দেশকে পৌঁছাতে ব্যর্থতার দায় আরে ভাই ও তার সাথীদের নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
কাজী আরেফ আহমেদের কন্যা কাজী আফরিন জাহান জুলি বলেন, একটি ভয়ঙ্কর নিশংস নির্দয় হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে আমরা কাজী আরেফ আহমেদ কে হারিয়ে ফেলি। খুনিরা তাকে সামনে থেকে গুলি করে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। তার হত্যার পেছনের পরিকল্পনাকারীদের সম্পর্কে আমরা এখনো জানতে পারি না। আমি মনে করি তাদের জানা প্রয়োজন।
অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, কাজী আরেফ আহমেদ এর মধ্যে সঠিক চিন্তা ছিল। মহান ছিল তার অনুভব। স্বাধীনতার স্বপ্নের বীজ বপনের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়াস এর সাথে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সংযোগ ছিল। কাজী আরেফ ছিলেন সেই নিউক্লিয়াসের অন্যতম নেতা। স্বাধীনতার স্বপ্ন শুধু নয় সমাজতন্ত্রের স্বপ্ন শুধু নয় বাংলাদেশের পতাকা তৈরীর সাথে ও তার ভূমিকা ছিল।
কাজী আরেফ এর বাংলাদেশ আজকের বাংলাদেশ নয় তার বাংলাদেশ হতে হবে নিউক্লিয়াসের বাংলাদেশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গণ আদালতের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে কাজী আরিফের অনন্য ভূমিকা রয়েছে। তার হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে। যদিও কোনো হত্যাই হয়না পরিকল্পনাকারী ছাড়া। এখনো সেই হত্যার কোন পরিকল্পনাকারীদের ধরা হয়নি। এই হত্যার পরিকল্পনাকারীদেরও বিচার একদিন হতে পারে।
নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার বলেন, কাজী আরেফ আহমেদকে আমরা যথাযথ মূল্যায়ন করিনি। তাকে সঠিক মূল্যায়ন করাটা জরুরী। তার কথা তরুণ প্রজন্মকে জানাতে উদ্যোগ নিতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :