সুজন কৈরী : রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বোমা হামলা ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিংয়ের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা অবনতি ঘটানোর পরিকল্পনা করাকালে নিউ জেএমবির দুইজন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি। আটককৃতরা হলো আল আমিন (২৭) ও শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদ (২৭)।
শুক্রবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেএমরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) সাইবার সিকিউরিটি এন্ড ক্রাইম বিভাগের ওয়েবসাইট এন্ড ই-মেইল ক্রাইম টিম।
শনিবার ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের এডিসি মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার ই-মেইলে একটি মেইল আসে যে, যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিং ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা করে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর কর্ম-পরিকল্পনা প্রনয়নের লক্ষ্যে কিছু লোক গোপন বৈঠক করছে। ওই তথ্যে ওইদিন বিকেলে যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল মাদ্রাসা বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আল আমিনকে আটক করে। অভিযানকালে তার সঙ্গে থাকা আরো দুইজন পালিয়ে যায়। আল আমিনের কাছ থেকে ৩টি মোবাইল ফোন, ও কালিমাতুশ শাহাদাহসহ বিভিন্ন বই জব্দ করা হয়।
আল আমিন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তার বাড়ি সিলেটের গোলাপগঞ্জ থানার দক্ষিণগাঁও। সে জানায়, ফেসবুকে তার তন্ময় বকশী নামে আইডি রয়েছে। আগে এই আইডিটি নয়ন চ্যাটার্জি নামে ব্যবহার করত্।ো এই আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন উস্কানী ও আক্রমণাত্মক লেখা পোস্ট করতো।
সে জানিয়েছে, সাইফ ওরফে বাবুলের হাত ধরে ২০১৫ সালে জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়। এরপর জঙ্গি বাবুলের মাধ্যমে উসামা ওরফে তাসকিনের সঙ্গে তার পরিচয় হয় ও পরে তার সঙ্গে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। ওই সময়ে তাদের মাধ্যমে জঙ্গি আব্দুস সালাম, ফয়জুল্লাহ ও মিলাদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা সমন্বিতভাবে বিভিন্ন নাশকতা কার্যক্রমের কর্ম-পরিকল্পনা প্রনয়ন ও সংঘটন করে। তারা পরস্পরের সঙ্গে ম্যাসেঞ্জার, টেলিগ্রাম, থ্রীমা এ্যাপসের মাধ্যমে কথা-বার্তা বলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে যোগাযোগ করতো। তারা টেলিগ্রামে বাংলার মুজাহিদ, সালাউদ্দিনের ঘোড়া, সবুজ পাখি গ্রæপগুলো ব্যবহার করতো। তার ভাষ্যমতে উসামা এবং বাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আ. সালাম, ফয়জুল্লাহ ও মিলাদের নিয়ে সে নিউ জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সে আরো স্বীকার করে, সে নিউ জেএমবির সিলেট এলাকার আঞ্চলিক কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করছে। পালিয়ে যাওয়া ২ জন ঢাকা অঞ্চলের নেতা, তাদের সঙ্গে সংগঠনের কর্ম-পরিকল্পনা সংক্রান্তে গোপন বৈঠক করছিল।
তার দেয়া তথ্যে শুক্রবার সন্ধ্যায় ডেমরার স্টাফ কোয়াটার এলাকায় অভিযান চালিয়ে শেখ গোলাম হোসেন ওরফে মিলাদকে আটক করা হয়। তার বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার দুর্লভপুরে। তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। আল আমিনের নেতৃত্বে মিলাদসহ আব্দুস সালাম ও ফয়জুল্লাহ জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
নাজমুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা হয়েছে। তাদেরকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :