আবু বকর : নতুন তিন ব্যাংকের অনুমোদন পেতে উদ্যোক্তারা হাল ছাড়েননি। আাগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্ষদ সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত দু’টি পর্ষদ সভা কোরামের অভাবে অনুষ্ঠিত না হওয়ায় ব্যাংক তিনটির ভাগ্য ঝুলে রয়েছে। উদ্দোক্তারা বর্তমানে পর্ষদ সদস্যদের আগামী সভায় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নানামুখী প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত বছর ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় দেশের তফসিলভুক্ত ৫৯তম ব্যাংক হিসেবে পুলিশের ‘কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডকে’ চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। বিবেচনায় থাকা বাকি তিনটি বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, পিপলস ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংকের অনুমোদন ‘এই মূহুর্তে’ দেওয়া সম্ভব নয় বলে ঐদিনের পর্ষদ সভায় জানিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে এসব ব্যাংকের উদ্যোক্তারা অনুমোদন পেতে নানামুখি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে একই বছরের মাঝামাঝি সময়ে তফসিলভুক্ত ব্যাংক হিসেবে বাণিজ্যিক কার্যক্রমের লাইসেন্স পেয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। সব মিলিয়ে ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত ১২টি ব্যাংকের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২৮ ফেব্রুয়ারির পর্ষদ সভায় নতুন তিন বেসরকারি ব্যাংক অনুমোদন দেয়া হলে দেশে তফসিলভুক্ত ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬২-তে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২৯ অক্টোবর বোর্ড সভায় কমিউনিটি ব্যাংককে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বাকি তিনটি ব্যাংকের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ “বেঙ্গল ব্যাংকের আবেদনে যে পরিচালকদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিলো, তাদের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে করসংক্রান্ত মামলা থাকায় অনুমোদন দেওয়া হয়নি।” ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যাংকের কোনো পরিচালক আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হলে তিনি আর ওই ব্যাংকের পরিচালক থাকতে পারবেন না। “যেহেতু আবেদন করা বেঙ্গল ব্যাংকের তিন উদ্যোক্তা পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা আছে সেহেতু তাদেরকে পরিচালক রাখলে কোনো অবস্থাতেই ব্যাংকটির অনুমোদন দেওয়া সম্ভব নয়।”
পিপলস ব্যাংকটির আবেদনে প্রস্তাবিত চেয়ারম্যান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা এম এ কাশেম। এই ব্যাংকটির অনুমোদন না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, “বোর্ড সভায় এম এ কাশেমের যুক্তরাষ্ট্রের যাবতীয় সম্পদের হিসাব চাওয়া হয়।” আবেদনে কাশেম সম্পদের যে হিসাব দেন তা যথাযথ নয় বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করেছিলো।” আর সিটিজেন ব্যাংক যে আবেদন করেছে তাতে সে সময় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকায় অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যে তিনটি ব্যাংকের আবেদন অনুমোদন না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে, সেগুলোর পৃষ্ঠপোষকরা নানাভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, আগামি পর্ষদ সভায় বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে। আর পিপলস ব্যাংক ও সিটিজেন ব্যাংকের কাগজপত্র ঠিক থাকলে উভয় ব্যাংকের প্রাথমিক অনুমোদন মিলতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :