আসিফুজ্জামান পৃথিল : ঢাকা শহরের বাতাসের মান বছরজুড়েই অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর থাকে। এর প্রধান কারণ নগরীর আশেপাথে থাকা ইটভাটাগুলো। এছাড়াও ঢাকা শহরের বাতাসের নিম্নমানের আরেকটি বড় কারণ নির্মানকাজের কারণে সৃষ্ঠ ধুলা, দূর্বল ইঞ্জিনের যানবাহন যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর উপাদান নিস:রণ করে এবং শিল্প কারখানাজাত বায়ু দূষণ। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলে ঢাকার বাতাস দেশের দূষিততম বাতাস নয়। ঢাকার চেয়েও নারায়ণগঞ্জের বাতাস দূষিত। এশিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক, ইলেভেন মিয়ানমার।
পরিবেশ বিভাগের ৫ বছরের গবেষণা বলছে ঢাকার চেয়েও নারায়ণগঞ্জের বাতাস দূষিত। ৩য় অবস্থানে রয়েছে গাজিপুরের বাতাস। এরপরেই যথাক্রমে রয়েছে রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা এবং বরিশালের বাতাস। সিলেটের বাতাস তুলনামূলকভাবে পরিচ্ছন্ন। ২০১৩ থেকে ১৮ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই গবেষণা পরিচালিত হয়। যদিও ঢাকা বাংলাদেশের ২য় দূষিত বায়ুর শহর তবুও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকা বিশ্বের ৩য় দূষিত বায়ুর মেট্রো শহর। ঢাকার সামনে রয়েছে শুধু দিল্লি ও কায়রো।
দূষিত বায়ুতে নিয়মিত শ্বাস নিলে হার্টের অসুখ, ফুসফুস ক্যান্সার, শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সহ বেশকিছু বড় ধরণের রোগ হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এর ফলে স্ট্রেকও হতে পারে। জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশে বায়ু দূষনৈর কারণে প্রতিবছর ৩৭ হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার শিকারদের গড় বয়স মাত্র ৩৭ বছর। গবেষণার ফলাফলে জানা গিয়েছে নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত যখন ইটভাটা চালু থাকে, তখন বাতাসে ক্ষতিকর কণার পরিমাণ বেশি থাকে। পরিবেশ বিভাগ ৮টি শহরের ১১টি স্থানে দৈনিক তথ্য সংগ্রহের জন্য যন্ত্রপাতি স্থাপন করে। এর মাধ্যমে এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স পরিমাপ করা হয়। বায়ু মানের এই সূচকে ০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত নম্বর দেওয়া হয়।
এই যন্ত্রগুলো বিভিন্ন ধরণের তথ্য সংগ্রহ করে। এর মধ্যে রয়েছে বাতাসে ভাসমান কণা, সালফার-ডাই-অক্সাইড এবং নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ। বায়ু মান সূচক ০ থেকে ৫০ হলো ভালো, ৫১ থেকে ১০০ হলে মাঝারি, ১০০১-১৫০ হলে সাবধানতা অবলম্বন, ১৫১ থেকে ২০০ হলে অস্বাস্থ্যকর, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ভুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১ থেকে ৫০০ হলে ভয়াবহ অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়। ২০১৮ সালে ১০৫ দিন নারায়ণগঞ্জের বায়ুমান সূচক ৩০১ এর উপরে ছিলেঅ। ঢাকায় ছিলো ৮৩ দিন। গাজিপুরে ৭২ দিন, রাজশাহীতে ৪৫ দিন, খুলনায় ৩৯ দিন, চট্টগ্রামে ১৩ দিন, বরিশালে ১৯ দিন এবং সিলেটে ছিলেঅ ৮ দিন। এ বছরের ২০ জানুয়ারি নারায়নগঞ্জে বায়ুমান সূচক ছিলো; ৪৭৫, ঢাকায় ৩৮২, চট্টগ্রামে ৩৬১, রাজশাহীতে ৩৫৬ এবং বরিশালে ৩৩৫।
আপনার মতামত লিখুন :