সাজিয়া আক্তার : গেলো পাঁচ বছরের বকেয়া ভ্যাট দিতে চান না দেশের তৈরি পোশাক মালিকরা। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ববোর্ড এনবিআরের কাছে এমন দাবি জানিয়েছে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। আর যাকে অযৌক্তিক বলছেন বিশ্লেষকরা। এদিকে গেলো বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে এসব পোশাক মালিকদের কাছ থেকে আগের দশমিক ৬ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটা হয়েছে, তারাও এখন সেই টাকা ফেরত চাচ্ছেন। চ্যানেল ২৪
রানা প্লাজা ধ্বসের পর বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে তৈরি পোশাক খাত। তৈরি হচ্ছে একের পর এক বিশ্বমানের কারখানা। সাম্প্রতিক সময়ে চীন, যুক্তরাষ্ট্র দ্ব›দ্বও এসেছে আশির্বাদ হয়ে। যার ফলাফল চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১৯ ভাগ। পুরো বিশ্বে যা ১৬ শতাংশের মতো। আর নতুন বাজারে তা ৩৬ শতাংশ।
সরকারও পোশাক খাতকে এগিয়ে নিতে করছে নীতি সহায়তা। বাজেটে কমেছে করপোরেট কর। হাতেগুণা কয়েকটি সেবা বাদ দিয়ে সব পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রেই দেয়া হয়েছে ভ্যাট অব্যাহতি। তবে এতেও সন্তুষ্ট নন পোশাক মালিকরা।
গেলো মাসে এনবিআরের সাথে এক বৈঠকে দেশের বাজার থেকে নেয়া যে কোনো পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রেই ভ্যাট না নেয়ার দাবি জানায় বিজিএমইএ। পাশাপাশি গেলো পাঁচ বছরের বকেয়া ভ্যাটও মওকুফের দাবি তাদের।
বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাসির বলেছেন, আমরা পুরোপুরি ভ্যাটের আওতামুক্ত হতে চাই। অনেক মালিক ভ্যাটের হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাই আমরা আবেদন করেছি এখান থেকে যেকোনোভাবে আমাদের পরিত্রাণ দেবার জন্য।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, সরকার ঘোষণা দিয়েছেন পোশাক মালিকদের ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দিতে। সেটা যখন থেকে ঘোষিত হয়েছে তখন থেকেই এটা বাস্তবায়ন যৌক্তিক। এর পূর্বের যে বকেয়া রয়েছে, সেগুলো নতুন আইনের আওয়তায় অব্যাহতির সুযোগ নেই। সেগুলো আদায়যোগ্য এবং আদায় করা যৌক্তিক। সরকারের বাজেট ঘোষণা থেকে জানা গেছে, তৈরি পোশাক খাতের জন্য এই খাতটি জিরো পয়েন্ট সিক্স জিরো থেকে এক শতাংশে নির্ধারণ দিতে হয়েছিলো। তখন থেকেই ব্যবসায়ীদের দাবি ছিলো তারা এটি কমিয়ে আনতে চান। সম্প্রতি এটিকে কমিয়ে জিরো পয়েন্ট টু ফাইভ পয়েন্ট করা হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এর পরবর্তী সময়কালে যে রপ্তানি হবে তার মূল্যমানের ওপর এটি নির্ধারিত হয়া উচিত।
সরকারের কাছে পোশাক মালিকদের দাবি দাওয়া এখানেই শেষ নয়। এ বছরের শুরুতেই এ খাতের উৎসে কর দশমিক ছয় শতাংশ থেকে করা হয় দশমিক ২ পাঁচ শতাংশ। আদেশ অনুযায়ী তা কার্যকরের কথা গেলো বছরের জুলাই থেকে। এর ফলে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় যাদের উৎসে কর কাটা হয়ে গেছে তারাও এখন সেই টাকা ফেরত চাচ্ছেন।
এবছরের শুরুতেই শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে সংশোধন করা হয় তৈরি পোশাক খাতের প্রস্তাবিত নূন্যতম মুজরি কাঠামো।
আপনার মতামত লিখুন :