সুমন পাইক: যৌন সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গাদেও আশ্রয় দেয়াতে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন সংঘাতকালীন যৌন বিষয়ক সংক্রান্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত প্রমীলা প্যাটেন (Pramila Patten)। সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসে ঢাকা সফররত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত এই প্রশংসা করেন।
মি. প্রমীলা প্যাটেল বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দান এবং তাদের জন্য বাসস্থান, খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করার জন্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ। দশ লক্ষেরও বেশি মিয়ানমার নাগরিককে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য ও খাদ্য সহায়তা দেওয়া বাংলাদেশের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ যথাযথভাবে এই মানবিক সাহায্য চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি ধর্ষণ এবং যৌন সহিসংসতার শিকার নারীদের মানসিক ট্রমা দূর করতে আরো বেশি মানসিক ও সামাজিক সহায়তা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সাহায্যের পরিধি বাড়াতে জাতিসংঘ সহায়তা ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন করার কাজ করছে। আশ্রিত মিয়ানমার নাগরিকদের প্রজনন স্বাস্থ্য সেবাকে শক্তিশালী করতে স্থানীয় পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা এবং মিডওয়াইফারি কার্যক্রম জোরদার করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
সে সময় বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা সহায়তার সার্বিক চিত্র তুলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতার দৃষ্টিকোন থেকে বাস্তুচ্যুতদের বাংলাদেশের আশ্রয় দিয়ে দ্রুততম সময়ে বাসস্থান, খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দ প্রশংসা করেছেন। কিন্তু সীমাবদ্ধ সম্পদ ও অধিক জনসংখ্যার রাষ্ট্র বাংলাদেশের পক্ষে অতিরিক্ত দশ লক্ষাধিক মানুষের জন্য এই সেবা দীর্ঘদিন অব্যাহত রাখা দূরূহ কাজ। তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে আশ্রিত মিয়ানমার নাগরিকদের সেদেশে ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকা কামনা করেন জাহিদ মালেক। তিনি রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবায় জাতিসংঘের সাহায্য অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেন।
সে সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল) বাবলু কুমার সাহা, অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) মোঃ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশে ইউএনএফপি এর প্রতিনিধি ড. আসা টোরকেলসন (Dr. Asa Torkelsson)সহ, মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :