সাত্তার আজাদ, সিলেট: শীতে সিলেটি ফল সাতরকার বাজার এখন বেশ চড়া। বিদেশে রপ্তানি হয় বলে ফলটির দামও একটু বেশি। স্বাদে ও ঘ্রাণে অতুলনীয়। সাতকরা দিয়ে মাছ বা গরুর মাংস রান্নাবান্না করাটা সিলেটের ঐতিহ্য। এ সময় সাতকরা পাকার মৌসুম হওয়াতে ও গাছে ফুল আসার সমসয়। তাই ফলের পরিমাণ কমে আসায় দাম বেড়ে গেছে বাজারে।
মূলত কোরবানির ঈদে সিলেটের বাজারে সাতকরার চাহিদার সাথে দামও বেড়ে যায়। গরুর মাংসের সাথে সাতকরার অতুলনীয় রান্না ও সুস্বাদু খাবার হওয়ার কারণে ওইসময় বাজারে সাতকরার দাম বেড়ে যায়।
সিলেটের সাতকরা এখন শুধু সিলেটেই পরিচিত নয়, এই ফলটির পরিচয় এখন বিশ্বময়। বিদেশেও রপ্তানি হয় লেবু জাতীয় এই ফল।
সিলেটের বন্দরবাজারে এখনো সাতকরা পাওয়া যায়। তবে দাম বেশি। প্রবাসী সিলেটিরা দেশে এসে যাওয়ার পথে সাত করা কিনে নিয়ে যান। কেউ সাতকরা কেটে শুকিয়ে ফুটি করে বিদেশে আত্মীয়স্বজনের কাছে পাঠান। সিলেটে অনেকে সাতকরার আচার তৈরি করেন।
সিলেটে বাণিজ্যিকভাবেও সাতকরার আচার বাজারজাত করা হয়। সিলেটের প্রধান সবজির আড়ৎ, বন্দরবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয় এই সাতকরা। টুরকিতে পসরা সাজিয়ে বা ঝুড়িতে সাজিয়ে সাতকরা বিক্রি করেন সবজি বিক্রেতারা। ছোট-বড় আকার ভেদে প্রতি হালি (চার পিস) সাতকরা বিক্রি হচ্ছে ৮০-১২০ টাকা করে বিক্রি হলেও এখন বাজারে হালি ২০০-২৫০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।
সিলেটের বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাটের জাফলং ছাড়াও এখানকার পাহাড়-টিলায় চাষ হয় সাতকরা। এটি দেশ-বিদেশে সিলেটি সাতকরা নামে পরিচিত। ক্রেতারা সিলেটের সাতকরা শুনলেই কেনার আগ্রহ দেখান।
লেবু জাতীয় গাছ সাতকরা। লম্বা কাঁটাভরা গাছ ২০-২৫ ফুট লম্বা হয়। ফাল্গুন মাসে ফুল আসে। জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়ে ফল হয়। সিলেটে এর প্রচুর চাহিদার কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আসাম ও মেঘালয় থেকেও সাতকরা আমদানি হয়। মূলত এই ফলের আদি স্থান ভারতের আসাম। সিলেট আসামের কাছাকাছি ও জমির প্রকৃতি এক হওয়ায় এখানে সাতকরা উৎপাদন হয়। ফলটি দেশের আর কোথাও হয় না।
আপনার মতামত লিখুন :