অনলাইন ডেস্ক : কুড়িগ্রামের সোনাহাট স্থলবন্দরের ভারতীয় অংশে অভ্যন্তরীণ জটিলতা ও ওভারলোডিংয়ে বাধার জেরে দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে বন্দরের কার্যক্রম। এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) করার পরও ভারত থেকে পণ্য না আসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীসহ বন্দরের শ্রমিকরা। খবর বাংলা নিউজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভারতীয় অংশের ব্যবসায়ীরা সরকারি ঘোষণার চেয়ে অতিরিক্ত পাথর ও কয়লা ট্রাকে লোড করে বাংলাদেশে পাঠানোর কারণে সেদেশের কয়েকটি ব্রিজ ও রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। সেজন্য ওভারলোডিংয়ে আপত্তি জানায় দেশটির গণপূর্ত বিভাগ। আর ওভারলোডেড ট্রাক চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ২৮ জানুয়ারি থেকে বন্ধ রয়েছে কয়লা ও পাথর আমদানিও। এমতাবস্থায় এলসি করার পরও ভারত থেকে কোনো পণ্য না আসায় ব্যবসায়ীরা যেমন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি রাজস্ব হারাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। বেকার হয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন বন্দরের প্রায় দুই হাজার শ্রমিক।
এ ব্যাপারে সোনাহাট স্থলবন্দর হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, সোনাহাট বন্দর চালু হওয়ার পর এই অঞ্চলের প্রায় দুই হাজার অভাবগ্রস্ত মানুষ বন্দরটিতে লোড-আনলোডসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। প্রায়ই এই বন্দরে পণ্য না আসায় বন্দরের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। এর ফলে এখানকার শ্রমিকরা পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছেন।
বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বন্দরটি চালু হওয়ার পর অনেক আশা নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। এর মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও ব্যবসায়ীরা আসা শুরু করেছেন। কিন্তু ভারতীয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারির অভাবে এলসি করেও কয়লা ও পাথরের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
বন্দর সিঅ্যান্ডএফের এজেন্ট সভাপতি সরকার রাকিব আহমেদ জুয়েল বলেন, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার অন্তর্গত সোনাহাট স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা ব্যাংক লোন নিয়ে আমদানির ব্যবসা পরিচালনা করছে। বছরের এই সময়টায় ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য কয়লা এবং কনস্ট্রাকশনের জন্য পাথরের চাহিদা বেশি থাকে। যার ফলে ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভ করতে পারেন। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
প্রায় সময়ই পণ্য আমদানি বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে বন্দর কর্তৃপক্ষের ওয়্যার হাউজ ইনচার্জ রবিউল আলম বলেন, বন্দরটি সচল থাকলে প্রতিদিন ১৪শ থেকে ১৫শ মেট্রিক টন পাথর ও কয়লা ভারত থেকে আমদানি হয়। এতে সরকারের বিপুল অংকের রাজস্ব আদায় হয়। কিন্তু প্রায় সময়ই আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মাসুদ হাসান জানান, ভারতের অভ্যন্তরীণ জটিলতার কারণেই স্থলবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করছেন।
আপনার মতামত লিখুন :