জাকারিয়া তারেক, ময়মনসিংহ থেকে: একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন না পেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনার ঝড় তুলেছেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নাজনীন আলম।
শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৭টা ১১ মিনিটের দিকে ফেসবুকে ‘আমার ফাঁসি চাই’ শিরোনামে স্ট্যাটাস দেন তিনি। ফাঁসির কারণ হিসেবে ভুল ও অপরাধের ৯ শর্তের বর্ণনাও দেন তিনি।
নাজনীন আলম ফেসবুকে লিখেছেন- ‘আমার ফাঁসি চাই..!! ১) কেন হাই কমান্ডের আশ্বাসকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম! ২) এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার প্রয়োজন কেন অনুভব করেছিলাম! ৩) এমপি/সিনিয়র কোন নেতার পরিবারের সদস্য কেন আমি হলাম না! ৫) কেন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে একটি পয়সা রোজগারের ধান্ধা করিনি! ৬) কেন দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে দিনে দিনে নি:স্ব হতে গেলাম! ৭) কেন জনসমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেছিলাম! ৮) কেন দলের ভোট ব্যাংক সমৃদ্ধ করতে সদা তৎপর ছিলাম! ৯) কেনতদ্বীর/তেলবাজি ঠিকমত করতে পারলাম না! ১০) কেন সমর্থকদের বার বার কাঁদাচ্ছি!! সম্ভবত এসবই আমার ভুল ও অপরাধ! এজন্য আমার শাস্তি হওয়া উচিত।
ব্যাংক কর্মকর্তা নাজনীন আলম বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক নাজনীন আলম ২০১৪ সালে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়ে হরিণ মার্কা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। সেময় মামলা হামলা শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েনি নাজনীন আলম। এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আলোচনা আসেন নাজনীন আলম। তার সমর্থকদের জেলও কাটতে হয়েছে অনেকের। সে সময় তৃণমুল নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে গিয়ে সমর্থন গড়ে তুলেন। ব্যাংক কর্মকর্তা নাজনীন আলম আরও বলেন, ‘প্রয়াত স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন মুজিবর রহমান ফকির মারা যাওয়ার পর ২০১৬ এর উপ-নির্বাচনে আমি যাতে নির্বাচন না করতে পারি সে জন্য আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারাও তৎপর ছিলেন। কেননা-যে কোন ভাবে আমি প্রার্থী হলেই আমিই জয়ী হবে- সে কথাই বলছিল গৌরীপুরের জনমত। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহন করেছি। তারপর ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলাম। কিন্তু দলের জন্য এত ত্যাগ করার পরেও কেন আমাকে বঞ্চিত করা হলো তা আমার বোধগম্য নয়।’
নাজনীন আলমের স্বামী ফেরদৌস আলম গণমাধ্যমকে বলেন, তার স্ত্রী নাজনীন আলম হাসপাতালে গেছেন। তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত, হাজার হাজার নেতাকর্মী-সমর্থকের বারবার আশাহতের বিষয়টি তুলে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন আমার স্ত্রী ও আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে মিশে আছি। দলের জন্য জীবনের যা অর্জন ছিল সব দিয়ে দিয়েছি। এরপরও আমরা কী পেলাম!
আপনার মতামত লিখুন :