মারুফ রসূল : তাতাই গিটারে টুঙটাঙ করছিলো আর সারাদিনই আমার মাথায় ঘুরেছে ইতিহাসের দায় মোচনের ২০১৩ সালের সেই অনন্য পাঁচই ফেব্রæয়ারি। আমাদের রাত ভোর করা শাহাবাগ, আমাদের দাবি আদায়ের শাহবাগ। তাতাই শাহবাগ আন্দোলনকে জানে, আমিও হোক কলরব বা জেএনইউর আন্দোলন সম্বন্ধে জানি। তাতাই শাহাবাগে উপস্থিত ছিলো না, আমিও যাদবপুর বা জেএনইউতে ছিলাম না। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ছিলেন, লেনন সবখানেই স্বপ্নবাজি জারি রাখতে বলেছেন, ম্যাডিসন স্কয়ারের মতো পৃথিবীর সব মানবিক আন্দোলনেই কী করে যেন জর্জ হ্যারিসন পৌঁছে যান। কোথাও ডিলান লালনের নেতৃত্বে মিছিল করেন, তো কোথাও পিট সিগার নজরুলের সঙ্গে গিটার বাজান।
তাতাই গাইছে আর আমার মগজের স্মরণীতে ছুটে বেড়াচ্ছে শাহাবাগের দিনরাত্রি, প্রতিবাদ, ক্ষোভ, হেরে যাওয়া, জিতে যাওয়া, ভুল, শুদ্ধ, জেদ… সব, সবকিছু। হ্যারিসন শাহাবাগের চৌরাস্তা পেরিয়ে যাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথের হাত ধরে… বস্তুত হারিয়ে যাচ্ছেন অন্য কোথাও বা প্রতিস্থাপিত হচ্ছেন… জ্বলে জ্বলে উঠছেন তারা, নক্ষত্রের সহপাঠীরা শিশির কণার মতো জমে আছে তাতাইয়ের গিটারের স্ট্রিঙে…ঝরে পড়ছে, মিশে যাচ্ছে… কেউ কেউ বুক পকেট থেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন জাফর মুন্সী, রাজীব হায়দার, জগৎজ্যোতিদের রোদ্দুর, কারও কারও হাতের রেখায় অভিজিৎ রায়ের কলমের আঁচড়। অর্থাৎ অমোচনীয়। তাতাই গাইছে- ঝঃরষষ সু মঁরঃধৎ মবহঃষু বিবঢ়ং, অথচ এই উচ্চারণ আমার কান অব্দি পৌঁছে যাচ্ছে ‘মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি’- এর হৃদয়জ অনুবাদ হিসেবে। তাতাইয়ের গিটার শান্ত হয়। আমি শুনতে পাই আকাশ বিদীর্ণ করে গোটা পৃথিবীজুড়ে আমার সহযোদ্ধারা বলছেন- ‘জয় বাংলা’। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :