আসাদুজ্জামান সম্রাট : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সংসদকে জানিয়েছেন, আসন্ন ৪৮তম স্বাধীনতা দিবসের আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর তাদের প্রত্যেককে আলাদা পরিচয় পত্র দেবে সরকার। তবে যাদের নাম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত হয়েছে কিন্তু বির্তক আছে তাদেরকে আরও যাছাই-বাছাইয়ে প্রমাণিত পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। গত পাঁচ বছরে ২০ হাজারের বেশি ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাকে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক আগামি ২৬ মার্চের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিচয় পত্র দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে দীর্ঘ দিনের এ দাবি এবার আমরা পূরণ করতে যাচ্ছি। তবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০১ সালের পর বিএনপি সরকারের আমলে অনেক বির্তকিত ব্যক্তিকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। তাই তাদের বিষয়ে বিশদ যাছাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। তাই ওই সময়ে যারা মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা আছেন তারাও আপাতত পরিচয়পত্র পাবেন না।
মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী বলেন, বিগত পাঁচ বছর আগে আমি যখন মন্ত্রী ছিলাম তখন দুই লক্ষের উপর মুক্তিযোদ্ধারা ভাতা পেতেন। প্রায় ২০ হাজারের অধিক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দিয়েছি। বর্তমানে ১ লাখ ৮২ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। এখনও সেই কাজ চলমান আছে। তবে মুক্তিযুদ্ধের দাবির প্রেক্ষিতে যে সমস্ত তালিকার বিরুদ্ধে কোন আপত্তি নেই, যেমন ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তি বার্তা। মুজিবনগর সরকারের যারা কর্মকর্তা-কর্মচারি ছিলেন, যারা বিভিন্ন সশস্ত্র বাহিনীতে থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, এছাড়াও নার্স, শিল্পী-কলাকুশলী যাদের ব্যাপারে কোন আপত্তি নেই তাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতিক্রমে আমরা মার্চ মাসের মধ্যে প্রকাশ করার জন্য চেষ্টা করব। কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। তার পক্ষে জাতীয় পাটির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু প্রশ্নটি উত্থাপন করেন। মন্ত্রী জানান, যাদের ব্যাপারে আপত্তি আছে তাদের বিষয়ে যাচাই বাছাই চলমান থাকবে। যাচাই বাছাইয়ে যারা টিকবে তাদের তালিকা পরে প্রকাশ করব। কিছু ভ‚য়া মুক্তিযোদ্ধার জন্য যারা মুক্তিযোদ্ধা তারা নিজেদের পরিচয়পত্র বুকে নিয়ে ঘুরবে, সেটি পারছে না। এটা তাদের দীর্ঘ দিনের দাবি। আমাদের সামনে স্বাধীনতা দিবসের আগেই প্রকাশের চেষ্টা থাকবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপরেই গত নিবাচনে জাতি আমাদের ম্যান্ডেড দিয়েছে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তৃণমুল পর্যন্ত পৌছে দিতে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। একই সাথে আগামি অর্থ বছরে মুক্তিযোদ্ধদের ভাতা যাতে আরো সম্মানজনক হারে বাড়ানো যায় সেই চিন্তা আমাদের মন্ত্রণালয়ের রয়েছে। দেশের স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার এবং পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘ঘৃণা স্তম্ভ’ নির্মাণের জন্য জায়গা নির্বাচনের কাজ চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :