সাত্তার আজাদ, সিলেট: কারখানার বর্জ্যে ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়েছে সিলেটের সুরমা নদী। নগরীর শতাধিক কারখানার বর্জ্য ড্রেন বা পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরাসরি সুরমা নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। নদী পাড়ে তৈরি বা বাসাবাড়ির পায়খানার পাইপ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সুরমায়। ড্রেনের ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হচ্ছে নদী। সুরমার তীর থেকে পায়খানা অপসারণ ও নদীতে সরাসরি বর্জ্য না ফেলার জন্য কয়েকটি কারখানাকে নোটিস করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা নোটিস আমলে নিচ্ছে না।
সুরমা নদীতে প্রতিদিন গোসল করেন নগরীর কয়েক হাজার লোক। স্থানীয় এসকল লোকজন এ ব্যাপারে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, নদীতে বর্জ্য ফেলায় গোসল করতে বা পানি মুখে দিলে দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। কারখানার বর্জ্য ছাড়াও নদী পাড়ের বেশিরভাগ টয়লেটের পাইপ সরাসরি সুরমাতে ফেলে দেওয়াতে দূষণ বেড়ে গেছে। ওই পানিতে গোসল করলে নানা ধরণের চর্মরোগও দেখা দেয়।
সুরমা নদীর উপশহর, মেন্দিবাগ, তোফখানা, চাঁদনিঘাট, ভার্তখলা, টেকনিকেল রোড, শেখঘাট, কলাপাড়া, কাজিরবাজার এলাকায় নদীর তীরে গড়ে উঠেছে একাধিক কারখানা। এসব কারখানার বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। নদী তীরবর্তী অসংখ্য টয়লেটের ময়লার পাইপ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে নদীতে। শীতে সুরমার গতি কমে গেলে দূষণ বেড়ে যায়। এলাকাবাসী জানালেন, সুরমা নদীতে বস সময় কারখানার বর্জ্য ও টয়েলেটের ময়লা পড়ে। কিন্তু শীতে পানি কমে যায় এবং নদীর স্রোত না থাকায় বর্জ্য ও মলার দুর্গন্ধ পরিবেশ বিষাক্ত করে তুলে।
সরেজমিন নদীর পানি পরীক্ষা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের এক কর্মকর্তা। প্রতিবেদনে বলা হয়, সুরমা নদীতে বর্জ্য ফেলে পানি দূষিত করা হচ্ছে। কারখানার বর্জ্য ছাড়াও টয়লেটের পাইপ নদীতে ছেড়ে দেওয়াতে দূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তর জানান, সুরমা নদী দূষণমুক্ত করার জন্য নদীর দুই পাড়ের কাঁচা পায়খানা ও নদীতে ফেলে সুপারীপচানো কার্যক্রম বন্ধে এবং নদী দূষণকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নোটিস দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :