সান্দ্রা নন্দিনী : ২০১৮ সাল চীনে কর্মরত বিদেশি সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে বাজে ছিলো বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত একটি জরিপে বলা হয়, দেশটির শিনজিয়াং প্রদেশে বিদেশি সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত গোয়েন্দা নজরদারি, অযাচিত সরকারি হস্তক্ষেপ ও অনুসরণের শিকার হতে হয়েছে। উল্লেখ্য, প্রদেশটিতে সংখ্যালঘু মুসলিম উইঘুর জনগোষ্ঠীকে ‘পুনর্শিক্ষিত’ করতে ক্যাম্প নির্মাণ করেছে চীনের সরকার। ডয়চে ভেলে
ফরেন করেসপন্ডেন্ট’স ক্লাব অব চায়না-এফসিসিসি জানায়, জরিপে ৫৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছে ২০১৭ সালের তুলনায় পরিস্থিতি আরোবেশি খারাপ হয়েছে। সে জরিপে ৪০শতাংশ এই মতামত জানিয়েছিলো। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এমন একজনও বিদেশি সাংবাদিক নেই যিনি বলেছেন যে গতবছরের তুলনায় ২০১৮ সালের পরিস্থিতি ভালো ছিলো।’
জরিপটির বিস্তারিত ফলাফল জানানো না হলেও এতে চীনে কর্মরত অন্তত ২০৪জন বিদেশি সাংবাদিক অংশগ্রহণের কথা থাকলেও ১০৯জন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বলে জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এফসিসিসি’র জরিপে দেখা গেছে ২৭জনের মধ্যে ২৪ অংশগ্রহণকারী শিনজিয়াংয়ে পেশাগত কারণে খবর সংগ্রহে গিয়ে ভয়াবহভাবে সরকারের হস্তক্ষেপের মধ্যে পড়েছেন। ১৯ জন বলেছেন, তাদের জোর করে তথ্য মুছে ফেলতে বলা হয়েছে। এছাড়া, ২৩জন জানিয়েছেন খবর সংগ্রহের সময় তাদের সর্বক্ষণ অনুসরণ করা হয়েছে। আরও ৩৭ শতাংশ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অনুবাদক হিসেবে বিদেশি গণমাধ্যমে কাজ করা চীনের কর্মীদের প্রতিনিয়ত হয়রানি, লাঞ্ছনা ও হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এমনকী, বিদেশি সাংবাদিকদের ভিসা নবায়নেও প্রচ- রকমের হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন’র প্রতিনিধি জানান, ‘আমি নিজে দেখেছি তারা আমার ল্যাপটপ খুলে আমার জিমেইল থেকে খবর সরিয়ে নিয়েছে।’
এছাড়া, যুক্তরাজ্যের টেলিগ্রাফ সংবাদসংস্থার চীনা প্রতিনিধি সোফিয়া ইয়ান জানান, উইঘুরদের সংবাদ সংগ্রহকালে তাকে বহুবার সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা লাঞ্ছনা ও জীবননাশের হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মুখপাত্র জানান, ‘জরিপটি সম্পূর্ণই ভিত্তিহীন ও একপেশে। সেটি চীনে কর্মরত সকল বিদেশি সাংবাদিকের প্রতিনিধিত্ব করে বলে আমরা বিশ^াস করি না।’
আপনার মতামত লিখুন :