শাহীন চৌধুরী: ভোলায় প্রাপ্ত গ্যাস উত্তোলনের জন্য ৩টি কুপ খননের অনুমোদন পেয়েছে রাশিয়ান কোম্পানি গ্যাজপ্রম। ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন। এদিকে ভোলার গ্যাস জাতীয় গ্রীডে যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে গ্যাজপ্রম। আর এ প্রকল্পের জন্য ব্যয় হবে ১ হাজার কোটি টাকা। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
সূত্রমতে, ভোলায় গ্যাজপ্রম যে ৩টি খুপ খনন করবে তার একটি করা হবে শাহজাদপুরে। আর ভোলা উত্তরে করা হবে দুটি কুপ। কুপ খননের এই প্রস্তাবটি গত ২৪ সেপ্টেম্বর পেট্রোবাংলা পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রস্তাবটি বাপেক্সে চলে যায়। তবে এখনও এ প্রস্তাবের ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রফর্মা ( ডিপিপি ) তৈরী হয়নি। ডিপিপি তৈরীর পর বাপেক্সে গ্যাজপ্রমকে জিয়োলজিক্যাল টেকনিক্যাল অর্ডার ( জিটিও) প্রদান করবে। এরপরই শুরু হবে খুপ খননের মূল কাজ।
এদিকে ভোলায় প্রাপ্ত প্রায় দুই টিপিএফ গ্যাস শুধুমাত্র ভোলায় ব্যবহারের কোনও সুযোগ নেই। সেখানে বড় ধরণের কোন শিল্প কারখানাও নেই। সেজন্যই এই গ্যাস জাতীয় গ্রীডে যুক্ত করতে হবে। এজন্য ছোট বড় মিলিয়ে ৬টি নদীর নীচ দিয়ে গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ করতে হবে। ৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের পর তা বরিশালে এসে জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে। তাহলেই কেবল এই গ্যাসের সুবিধা পাবে দেশের মানুষ।
এ প্রসঙ্গে গ্যাজপ্রমের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, দেশের গ্যাস চাহিদা মেটানোর জন্য ভোলার গ্যাস ফিল্ড দ্রুত উন্নয়ন করা জরুরী। এজন্য যত তারাতারি জিটিও দেয়া হয় ততই মঙ্গল। তিনি বলেন, যে ৬টি নদীর নীচ দিয়ে পাইপলাইন নির্মাণ করতে হবে তার মধ্যে একটি বেশ বড় নদী রয়েছে। ওই নদীটির দৈর্ঘ ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার। কিন্তু গ্যাসপ্রমের এ ধরণের কাজের ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই আমাদের পক্ষে এই পাইপলাইন নির্মাণ করা সম্ভব। এজন্য আমরা ১২০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প প্রস্তাব জমা দিয়েছি।
ভোলা গ্যাস ক্ষেত্রের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একেএম রুহুল ইসলাম চৌধুরী আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, ভোলার একটি কুপ খননের জন্য ইতিমধ্যেই জিটিও হয়ে গেছে। বাকী দুটির সাইড লোকেশন কনফার্ম হয়েছে। খুব শিগগিরই এ দুটির জিটিও হয়ে য়াবে।
প্রসঙ্গত, এই মূহুর্তে ভোলা দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে স্থানে গ্যাস পাওয়া গেছে তার আশেপাশে আরও ৪ থেকে ৫ টিসিএফ গ্যাস পাওয়া যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। সেক্ষেত্রে ভোলা দিয়েই দেশের গ্যাস সমস্যার একটি বড় সমাধান করা সম্ভব। এজন্য সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিৎ বলে তারা মনে করেন।
আপনার মতামত লিখুন :