শিরোনাম
◈ মালদ্বীপ থেকে সব সেনা সরিয়ে নিয়েছে ভারত ◈ গাজায় বোমা হামলা, চার ইসরায়েলি সেনা নিহত ◈ হায়দার আকবর খান রনো মারা গেছেন ◈ ডোনাল্ড লু’র ছয়দিনের সফর শুরু, ভারত ও শ্রীলঙ্কা হয়ে বাংলাদেশ আসছেন ১৪ মে ◈ লোহাগড়ায় দুর্বৃত্তের গুলিতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু ◈ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস  ◈ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টানা চার জয় বাংলাদেশের ◈ বন্দি ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলি বাহিনীর অমানবিক নির্যাতনের তথ্য-ছবি ফাঁস ◈ গাজার রাফাহজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা ও বোমাবর্ষণ ◈ কোনো ভর্তুকি ছাড়াই নিজস্ব আয় থেকে উড়োজাহাজের মূল্য পরিশোধ করছে বিমান

প্রকাশিত : ০৪ জুন, ২০১৮, ০৪:৫৯ সকাল
আপডেট : ০৪ জুন, ২০১৮, ০৪:৫৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মাদক ব্যবসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অফিসের তদন্ত প্রতিবেদনে ভিন্ন সুর বিবাড়িয়া পুলিশের

ডেইলি স্টার প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রীর অফিসের তদন্তে প্রমাণ মিলেছে বিবাড়িয়ার ১৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এ নিয়ে বিবাড়িয়ার পুলিশ বলছে তাদের কেউ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। ওই ১৬ জন পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে ৫ জন ওসি আছেন। এরা সবাই মিলে অবৈধ মাদক ব্যবসা ও চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। মাসুক হৃদয় এবং মোহাম্মদ জামিল খান প্রধানমন্ত্রীর অফিসে এ নির্ভরযোগ্য তদন্ত প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। কিন্তু বিবাড়িয়ার পুলিশি তদন্তে তাদের নির্দোষ বলা হয়েছে।

বিবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট ইকবাল হোসেন বলেছেন, তালিকাভুক্ত ১৬ জন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে কোনো মাদক ব্যবসা ও চোরাচালানে জড়িত থাকার তথ্য মেলেনি। তবে প্রধানমন্ত্রীর অফিস বিবাড়িয়ার স্থানীয় গোয়েন্দা সূত্রের ওপর ভিত্তি করেই ওই প্রতিবেদনটি তৈরি করে। এরপর প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর তা বিবাড়িয়া জেলা পুলিশের কাছে পুনরায় তদন্তের জন্যে পাঠানো হয়। অথচ বিবাড়িয়ার অন্তত ৩ জন ওসি দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজসে এ ধরনের ব্যবসা করে আসছেন। এরা হলেন, আখাউড়া থানার ওসি মোসাররফ হোসেইন তরফদার, যার নাম প্রধানমন্ত্রীর অফিসের প্রতিবেদনের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে এবং বলা হয়েছে ইনি স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী হান্নান মিয়া বা হান্নান মেম্বারের সঙ্গে মাদক ব্যবসা করছেন।

হান্নান আখাউড়া পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবক লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং তার বিরুদ্ধে ওই থানায় দুটি মামলা রয়েছে। কিন্তু ওসি মোসাররফ কখনো তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। তারা বরং একত্রেই ঘুরে বেড়ান ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে দেখা যায়। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তাদের দেখা যায় অহরহ। তাদের অনেক সেলফি ফেসবুকে পাওয়া যায়। হান্নান বর্তমানে ভারতে পালিয়ে গেছেন। মাদক মামলায় তিনি ঘোষিত আসামী। তার প্রক্সি হিসেবে আরেক ব্যক্তি কারাদ- ভোগ করছেন।

মোসাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হান্নানকে খুঁজছি, কোনো তথ্য থাকলে আমাকে দিন। আর এটা খুব কঠিন ডিউটিতে থাকার সময় কে আমার সাথে সেলফি তুলল তা খেয়াল রাখা।

প্রধানমন্ত্রীর অফিসের প্রতিবেদনের তালিকায় দ্বিতীয় নামটি হচ্ছে বিজয়নগর থানার ওসি আলী আরশাদের। তার সঙ্গে যোগসাজসে বিজয়নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হোসেইন মোহাম্মদ দুলাল বছরের পর বছর ফেন্সিডিলের ব্যবসা করে আসছেন। উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন এ তথ্য দেন। কিন্তু দুলাল বলছেন, তিনি কখনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তবে ওসির সঙ্গে তার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। থানার সামনে তার ইলেক্ট্রোনিক্সের দোকান আছে তার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবলীগ নেতা জানান, দুলার ফেন্সিডিল ব্যবসা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ওসি ‘মাদক স¤্রাজ্ঞী’ হিসেবে পরিচিত ফারিয়া বেগম ফারির সঙ্গে দহরম মহরম রেখে চলছেন। ফারিয়া বেশ কয়েকবার জেল খেটেছেন। অন্তত ১০টি মাদক মামলায় ফারিয়াকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। ওসি আরশাদকে ফারিয়ার বাসায় যাতায়াত করতে অনেকেই দেখেছেন। ফারিয়ার একাধিক ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। ওসি আরশাদ বলেন, দুই বছর আগেই পুলিশে যোগ দেবার পর থেকে মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ শুরু করি। দুলালকে চিনি তবে সে মাদক ব্যবসা করে কি না জানিনা। ফারিয়াকে চেনেন না বলে জানান আরশাদ।

প্রধানমন্ত্রীর অফিসের তালিকার সাত নম্বরে রয়েছে আশুগঞ্জ থানার ওসি বদরুল আলম তালুকদারের নাম। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কসবা থানায় যখন ওসি ছিলেন বদরুল তখন থেকে তিনি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। সেটি ৬ বছর আগের কথা। স্থানীয় এলাকাবাসী ছাড়াও আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী বলেন, বদরুল মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ২০১৪ সালে বদরুল বদলি হয়ে ভৈরব বাজার থানায় আসেন। তবে বদরুল বলেন এসব ভুয়া অভিযোগ।

প্রধানমন্ত্রীর অফিসের তালিকায় আরো ৯ জন সাব-ইন্সপেক্টর ও দুই এ্যাসিসটেন্ট সাব ইন্সপেক্টরের নাম রয়েছে। বিবাড়িয়া জেলা পুলিশ ১০ এসআই ও এএসআইকে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করলেও তা রুটিনমাফিক বলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ওই প্রতিবেদনে ক্ষমতাসীন দলের সাত নেতার নাম রয়েছে। জেলার আওয়ামী লীগ নেতা ও বিবাড়িয়ার তিন আসনের সংসদ সদস্য ওবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী বলেছেন কারো বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ পেলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়