সাঈদা মুনীর: পৃথিবীর ধ্বংস হতে আর বেশি দিন নেই। সম্প্রতি মার্কিন লেখক ডেভিড মেডসহ একদল গবেষক এমন দাবিই করেছেন। মায়ানদের ক্যালেন্ডার আর বাইবেলে বর্ণিত তথ্য গবেষণা করে তারা জানিয়েছেন চলতি মাসের ২৩ তারিখে আমাদের তিলে তিলে গড়ে ওঠা সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে। যার পেছনে দায়ি থাকবে সৌরজগতের রহস্যময় সদস্য প্ল্যানেট এক্স। শোনা যাচ্ছে, আগামী ২৩ এপ্রিলই নাকি ধ্বংস হবে পৃথিবী! ওইদিনই নাকি আকাশে দেখা যাবে সৌরজগতের দ্বাদশ গ্রহ নিবিড়ুকে। আর সেইদিনই ধ্বংস হবে আমাদের নীল গ্রহ!
২০১২ সালের কথা অনেকেরই মনে থাকবে। বলা হয়েছিলো এদিন নাকি পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। এ নিয়ে কম জল্পনা-কল্পনাতো ঘটেনি। আবারও শোনা যাচ্ছে পৃথিবী ধ্বংস হওয়া নিয়ে আরেক গুজব। তবে এবার নাকি সত্যি পৃথিবী ধ্বংস হবে।
কিন্তু সত্যিই কি এমন কিছু হবে? প্রথমেই বলে ফেলা যাক, না। এমন কোনও ঘটনা যে ওইদিন ঘটবে না তা সকলেরই জানা। কেননা, এমন দাবি তো নতুন নয়। থেকে থেকেই এমন অসম্ভব দাবির কথা ভেসে আসে।
গত বছরের অক্টোবর, নভেম্বর— পর পর দু’মাসে পৃথিবী ধ্বংসের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’-এ বিশ্বাসীরা। ব্যাপারটা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, এখন আর লোকে ভয় তো পাচ্ছেই না, উলটে হাসাহাসি শুরু হয়েছে। তবু বিরাম নেই ভবিষ্যদ্বাণীর।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, প্ল্যানেট এক্স তথা নিবিড়ু গ্রহের আবির্ভাবের সঙ্গেই অন্তিমকাল ঘনিয়ে আসবে। পৃথিবীর— এই খবরকে নস্যাৎ করে দিয়েছে নাসা। নিবিড়ুর অস্তিত্ব কোনওদিনই মানেনি তারা।
২৩ এপ্রিল পৃথিবীর ধ্বংসের সঙ্গে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের বিশ্বাসীরা এবার মিলিয়ে দিয়েছেন যিশু খ্রিস্টকেও। বলা হচ্ছে, ওইদিন সূর্ষ, চাঁদ ও শুক্র এক সরলরেখায় আসবে। বাইবেল বর্ণিত ‘র্যাপচার’ অর্থাৎ যিশুর প্রত্যাবর্তনকেও জড়িয়ে ফেলা হয়েছে তাদের বক্তব্যে।
আগামী ২২ এপ্রিল আর্থ ডে বা পৃথিবী দিবস পালনের পরদিনই কি তবে একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহটির ধ্বংস দেখতে হবে? মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে। যদিও তারাও সৌরজগতের দশম গ্রহ অর্থাৎ রহস্যময় প্ল্যানেট এক্স’র অস্তিত্ব সম্পর্কে কখনও অস্বীকার করেনি। তবে তাদের দাবি, এত শীঘ্রই এমন ভয়াবহ দিন আসছে না।
অবশ্য এর আগেও একাধিকবার রহস্যময় নিবিরু গ্রহের আগমনের দাবি উঠেছিল। ডেভিড মেড’ও এমন দাবি করেছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে, ২০১৬ সালের এপ্রিল ও ডিসেম্বরে, ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বরে এমন পৃথিবীর ধ্বংসের দাবি উঠেছিল। যার সবই মিথ্যে প্রমাণিত করে আজও টিকে রয়েছে এই সভ্যতা।
কিন্তু গবেষকদের দাবি, মায়ান সভ্যতার হিসেবে কিছু গোলমাল থাকতে পারে। এমনও হতে দীর্ঘ সময় আগের হিসেবে কিছুটা গণ্ডগোল হতেই পারে। তবে হারিয়ে যাওয়া উন্নত সেই জাতি মিথ্যে দাবি করেছিল এমনটা মানা বোকামি।
তার পর শুরু হবে অপেক্ষা, আবারও একটি তারিখের। যেদিনটা নাকি সভ্যতার শেষ দিন! দেখা যাক, ২৩ এপ্রিলের পরে আবার কোন দিনের কথা শোনায় ষড়যন্ত্রের তাত্ত্বিকরা।
আপনার মতামত লিখুন :