শাহানুজ্জামান টিটু : সরকারের হুকুমে কারসাজিমূলকভাবে বেগম জিয়ার জামিনকে স্থগিত করা হয়েছে এই অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এসব ঘৃণ্য চক্রান্ত বাদ দিয়ে তাঁকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। তাঁর চিকিৎসা কিসে ভাল হয় সেটি তাঁকে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ দিন। বেগম জিয়ার ইচ্ছানুযায়ী তাঁর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করুন।
রোববার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে গুরুতর অসুস্থ। তিনি অসুস্থ হলেও এখন পর্যন্ত তাঁকে কোন চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। সরকারি মেডিকেল বোর্ড মামুলি প্রহসনের এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষা করে ফিজিওথেরাপীর সুপারিশ করেছে। একজন বয়স্ক ও দেশের জনপ্রিয় নেত্রী যিনি দীর্ঘদিন ধরে হাঁটু ও চোখের সমস্যার পাশাপাশি তাঁকে কারাগারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখায় আরও বেশকিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাঁর দুই হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছে এবং সম্প্রতি চোখের অপারেশনও হয়েছে। এমনকি সরকারি মেডিকেলের চিকিৎসক বোর্ড বলেছে তাঁর এক্স-রে রিপোর্টগুলোতে দেখা যাচ্ছে ঘাড়ে ও কোমরের হাড়ে সমস্যা আছে।
আরো পড়ুন : কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিএনপির রঙিন স্বপ্ন ভেস্তে গেছে
তিনি বলেন, এমতাবস্থায় আধুুনিক চিকিৎসার যুগে এমআরআইসহ উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া শুধুমাত্র এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট ও সঠিক রোগ নির্ণয় সম্ভব নয়। দেশনেত্রীকে যেদিন পিজি হাসপাতালে আনা হয়েছিল সেখানে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের ডাকা হলেও তাদেরকে চিকিৎসা সেবার সুযোগ ও পরামর্শ নেয়া হয়নি।
রিজভী বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে নিঃশেষ করার জন্যই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে এখন চিকিৎসার সুযোগও দেয়া হচ্ছে না। এটা জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে বহুমুখী চক্রান্তের অংশ। কারাগারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনদের দেখা করতেও বাধা দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ১লা বৈশাখে দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তিনি গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন-অশুভ শক্তি যেন আর ক্ষমতায় না আসতে পারে। এখন জনগণ মনে করে দেশের সবচেয়ে বড় অশুভ শক্তি বর্তমান মহাজোট সরকার। ভোটারবিহীন অগণতান্ত্রিক শক্তি হচ্ছে সবচাইতে নিকৃষ্ট অশুভ শক্তি। মানুষ দিন গুনছে এই অশুভ শক্তির পতনের। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বৈরাচারীরা কী শুভ শক্তি ?
তিনি আরো বলেন, অনাগত দিনের দুশ্চিন্তা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, হতাশা আর বিরোধীদের গুম, খুন, অদৃশ্য করা, হাত-পায়ের নখ তুলে ফেলা, হাঁটুতে গুলি করে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করা, খুলনায় বিএনপি নেতাকে তুলে নিয়ে কক্সবাজারে অর্ধমৃত অবস্থায় ফেলে দেয়া ইত্যাদি পরিস্থিতিতে দেশের বিরাট জনগোষ্ঠী প্রাণখুলে হাসতে পর্যন্ত ভুলে গেছে। এই পরিস্থিতি কী কোন শুভ শক্তির লক্ষণ ? জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, জনগণের সমস্ত মৌলিক ও মানবাধিকার কেড়ে নিয়ে, নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে সম্পূর্ণ বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছেন। এটা কী শুভ শক্তির পরিচয় বহন করে ? এখন রাষ্ট্রক্ষমতাকে আরও দীর্ঘ মেয়াদে ভোগ করার স্বপ্নে দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করতে জেলজুলুম ও বিভিন্ন কায়দায় নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েও নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না।
আরো পড়ুন : স্বাধীনতা বিরোধীদের চিহ্নিত করে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে: শাজাহান খান (ভিডিও)