জাহিদ হাসান : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার হলে আবারও আন্দোলন হবে। কিন্তু কোটা না থাকলে কেউ আন্দোলন করবে না। তাই সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকারই দরকার নেই।
বুধবার বিকালে জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানকের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সমঝোতা হলো। ৭ মে পর্যন্ত সময়ও নেয়া হলো। কিন্তু মানি না মানব না বলে শিক্ষার্থীরা আবারও রাস্তায় বসে গেলো। বিশ্ববিদ্যালয় সেশন জট ছিল না। কিন্তু আন্দোলন করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের এ কদিনে পরীক্ষা নষ্ট হয়েছে, ক্লাস পরীক্ষা বন্ধও ছিল। এজন্য রাস্তাঘাটে জনগণকে কষ্ট পোহাত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ বারবার কষ্ট পাবে কেন? সব কোটা বাতিল।
আরো পড়ুন : সরকারি দলের নেতাদের সংযত হওয়ার কঠিন পরামর্শ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলন করছে, তাদের কী কাজ? ক্লাস পরীক্ষা বাদ দিয়ে সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে বসে থাকা। ঘটনা সমস্ত দেশে ছড়িয়ে পড়লো। সেই শিক্ষা গঠনমূলক ব্যবহার করা হচ্ছে। একটা ছেলে আহত হয়েছে। কিন্তু মারা গেছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে।
আরো পড়ুন : শুধু ঘোষণা নয়, প্রধানমন্ত্রীকে সময়সীমাও বলতে হবে
তিনি বলেন, হলের গেট ভেঙে মেয়েরা বের হয়ে গেছে। এই উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস কেন দেয়া হলো। এরপর যদি কোনো অঘটন ঘটত, কে দায়িত্ব নিত? ভিসির বাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে। আমরাও একসময় ছাত্র ছিলাম। কিন্তু কখনো ভিসির বাড়িতে হামলা হতে দেখিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তর সালেও পাকিস্তানে হানাদার বাহিনী এমন বর্বর হামলা আমাদের ধারমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে চালিয়েছিল । ভিসির পরিবারকে ভয়ে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। যে সিসি ক্যামেরা ছিল, হামলকারীরা তা ভেঙেছে। রেকর্ডিং বক্স সরিয়ে নিয়েছে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না। তারা ছাত্র হতে পারে না। এর তীব্র নিন্দা জানাই আমরা।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আন্দোলনরতদের সঙ্গে মন্ত্রী বসেছিলেন। ক্যাবিনেট সেক্টরে নির্দেশ দিলাম, দাবি পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। মন্ত্রী গেল, তার সঙ্গে বৈঠকে গেলো। সমঝোতা হলো। তিনি বলেও দিলেন, কী নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু অনেক ছাত্র ছাত্রী মানলা না। কেন মানল না?
আরো পড়ুন : তীব্র যানজট দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
এর আগে সকাল ১০টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কোটা সংস্কার বিষয়ে কথা বলতে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। পরে দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দুপুরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আজ সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্ব আছে। সেখানে এই কোটা প্রসঙ্গ চলে আসতে পারে। সেখানে দেখুন প্রধানমন্ত্রী কী বলেন।’
আরো পড়ুন : ‘ভুল হলে তোমরা আমাদের ক্ষমা করে দিও’
সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে আন্দোলন ঢাবিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন চলছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :