লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার ৩৬ ঘণ্টায়ও উন্নতি নেই রাজীবের
রিকু আমির : লাইফ সাপোর্টে নেওয়ার ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় পার হলেও কোনো উন্নতি নেই ঢাকার কারওয়ান বাজারে দুই বাসের চাপে ডান হাত হারানো রাজীবের।
আচমকা তার অবস্থার দ্রুত অবনতিতে চিকিৎসকদের মধ্যেও কাজ করছে মনোকষ্ট।
মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) তে থাকা সরকারি তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখনই তাকে লাইফ সাপোর্টে দেয়া হয়।
রাজীবের চিকিৎসায় গঠিত সাত সদস্যের মেডিকেল বোর্ড প্রধান ঢামেক হাসপাতালের অর্থপেডিক্স বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামসুজ্জামান বুধবার বিকালে এ প্রতিবেদককে বলেন, রাজীবের অবস্থার উন্নতি নেই। এটা আমাদের ভীষণ মনোকষ্টের কারণ। তার প্রতি আমরা এতো কেয়ার নিয়েছি- বলার বাইরে। তার কিডনি, লিভারসহ অন্য প্রত্যঙ্গ ঠিক আছে, স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। শুধুমাত্র মস্তিষ্ক থেকে সিগন্যাল পাস হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বুঝতেই পারিনি, মাথার ভেতরের ক্ষত ফুলে আবার রক্তক্ষরণ হবে। এটা তো মস্তিষ্ক। সিটিস্ক্যান ছাড়া বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। প্রথমে যে সিটি স্ক্যান করলাম, তা দেখে ধারণা করা যায়নি, এই অবস্থায় গড়াবে ছেলেটার ভাগ্য।
সোমবার নার্সদের সহযোগিতায় রাজীব দুধ-রুটি খেয়েছিলেন। দুর্ঘটনার শিকার হবার পর এটিই ছিল প্রথম খাদ্যগ্রহণ। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শামসুজ্জামান বলেন, ও খাদ্যগ্রহণ করেছে শুনে আমাদের আশা অনেক অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু আচমকা এভাবে ওকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হবে, এটা কল্পনার বাইরে ছিল।
তিনি বলেন, ওর মাথার আঘাত গুরুতর, এটা ঠিক আছে। এক্ষেত্রে এ ধরণের সমস্যা হয়। কিন্তু তাই বলে এতো দ্রুত হবে, ভাবিনি। হাতে সময়ই ছিল না। চট করে লাইফ সাপোর্টই লেগে গেল। বুধবার পরিচালকের সঙ্গে রাজীবকে নিয়ে কথা হয়েছে। তার মনও বেশ খারাপ। যদি রাজীব ওয়ার্ডে বা কেবিনে থাকত, আর তখন এই সমস্যা ধরা পড়ত। আইসিইউতে এনে সব ব্যবস্থা করতে করতে তাকে বাঁচানো হয় তো কঠিন হয়ে পড়ত।
প্রখ্যাত নিউরো সার্জন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া মঙ্গলবার রাজীবকে দেখেন।
তার বক্তব্য- রাজীবের মস্তিষ্কের আঘাতস্থল ফুলে গেছে। সেখানে আবারও রক্তক্ষরণ হয়েছে। এখন আর অপারেশন করার অবস্থা নেই। তার শরীর আনফিট।
আপনার মতামত লিখুন :