সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে তাকে স্মরণ করে স্বল্পপরিসরে কিছু বলতে গেলে, স্বপ্নগাঁথা বাংলাদেশের অনেক অধ্যায় অজানা থেকে যাবে। তারপরেও যদি এক কথায় বলি, তাহলে স্বীকার করে নিতে হবে- তিনি আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা। জিয়াউর রহমান আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার ঘোষক, রনাঙ্গনের সাহসী যোদ্ধা এবং জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সর্বশেষ্ঠ খেতাব বীর উত্তম উপাধীতে তিনি ভূষিত। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধের সময় তার নামে জেড ফোর্স গঠিত হয়েছিল।
আজকের আধুনিক বাংলাদেশের বহুকিছু পরিবর্তনের মূলে তার নাম গেঁথে আছে। যেমন: বর্তমান অর্থনীতির মূলভিত্তি পোশাকশিল্প এবং রেমিটেন্স এই দুই ক্ষেত্রই জিয়াউর রহমান সূচনা করেছিলেন। আজকে আমরা গ্রামে গ্রামে যে বিদ্যুৎ দেখতে পাচ্ছি, এই পল্লি বিদ্যুৎ বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। উত্তর বঙ্গে মঙ্গা নেই বলে আজকে যারা গর্ব করেন, অহংঙ্কার করেন, এই মঙ্গা না থাকার প্রধান কারণ হচ্ছে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ হেক্টর জমিতে পানি সেচের ব্যবস্থা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। যেকারণে উত্তরাঞ্চলে আজ বনায়ন হয়েছে। দেশ জুড়ে এই বনায়ন কর্মসূচীও চালু করেছিলেন তিনি। গণস্বাক্ষরতা কর্মসূচি, হালখাতার মাধ্যমে জমিতে সেচের ব্যবস্থা করা, যুব মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে যুবকদের আতœকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করাসহ নানামূখি পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি।
পররাষ্ট্র ক্ষেত্রেও তিনি অনন্য অবদান রেখে গেছেন । জিয়াউর রহমানের আমলে প্রথমবার বাংলাদেশ ভোটে প্রতিদ্বন্দিতা করে জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হয়েছিল। ইরাক-ইরান যুদ্ধের মীমাংসা করার ক্ষেত্রে তিনি মধ্যস্ততা করেছিলেন। তিনি আলকুদস কমিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং একজন সদস্য রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সার্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং সার্ক এর প্রথম চেয়ারম্যানও তিনি। এছাড়াও বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে সকল দলের রাজনীতি করার সুযোগ করেছিলেন, যার ফলে আজকের আওয়ামী লীগ এতবেশি কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। সেই সাথে সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে রুদ্ধ গণমাধ্যমকে মুক্ত করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা এভাবে বলে শেষ করা সম্ভব নয়। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে মিশে আছেন। কর্মের মাধ্যমে তিনি সর্বদাই বর্তমান। তাকে ছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশের কথা কল্পনা করাই অসম্ভব। সুতরাং বাংলাদেশের এক অবিচ্ছেদ্য নাম শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
পরিচিতি : যুগ্ম মহাসচিব, বিএনপি
মতামত গ্রহণ : লিয়ন মীর
সম্পাদনা : মোহাম্মদ আবদুল অদুদ