ফয়সাল চৌধুরী : কুষ্টিয়ায় সড়কে কোনো ভাবেই থামছে না মৃত্যুর মিছিল । কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে একটি মোটরসাইকেলকে কাভার্ডভ্যান ধাক্কা দিলে এক গৃহবধূ ও তার মেয়ে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১০ জুন) রাতে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালীর নদন্দনালপুর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলে আরোহী মা' রিনা (৩০) খাতুনের মৃত্যুর ৪ ঘন্টা পর মারা গেলেন মেয়ে স্কুল ছাত্রী জয়া খাতুন (১১)। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন জয়ার বাবা আশরাফুল ইসলাম জনি (৩৬)। আশরাফুল ইসলাম জনি কুষ্টিয়া শহরের হউজিং সি ব্লকের আব্দুস সালামের ছেলে। তিনি পেশায় একজন মোটরগাড়ি মেকার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে জনি তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে মোটরসাইকেলে রাজবাড়ী জেলার পাংশার মাছপাড়া এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিজ বাড়ির কুষ্টিয়ার হাউজিংয়ে উদ্দেশে রওয়ানা হন। আসার পথে কুষ্টিয়ার কুমারখালী নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় পৌঁছালে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে এ সময় একটি কাভার্ডভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রাস্তায় ওপরে ছিটকে পড়ে রিনা খাতুনের মৃত্যু হয়। এ সময় স্বামী জনি ও দুই সন্তান গুরুতর আহত হন।
পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। বড় মেয়ে জয়ার ডান পায়ে আঘাতজনিত কারণে রক্তক্ষরণ হয়। পরে রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল তার মৃত্যু হয়। রাতেই দুটি লাশ পরিবারের সদস্যরা নিয়ে যায়।
এদিকে কুমারখালী থানা পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে আহত আশরাফুল ইসলাম জনি বলেন, রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে আমি, দুই মেয়ে ও আমার স্ত্রী মিলে চারজন বাড়ি ফিরছিলাম। হঠাৎ একটি গাড়ি পেছন থেকে ধাক্কা দিলে আমরা সড়কে পড়ে যাই। এতে ঘটনাস্থলেই আমার স্ত্রী মারা যায়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়ে জয়াও মারা যায়।
কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. আশরাফুল আলম সড়ক দুর্ঘটনায় মা-মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মায়ের মৃত্যুর প্রায় চার ঘণ্টা পরে রাত দেড়টার দিকে চিকিৎসাধীন জয়ার মৃত্যু হয়। তার বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা মোটামটি ভালো।
চৌড়হাঁস হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইদ্রিস আলী বলেন, মোটরসাইকেলে চারজন ছিল। ঘটনাস্থলে স্ত্রী রিনা মারা যায়। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়ে জয়া মারা গেছে।
এ ব্যাপারে কুমারখালী থানা ওসি তদন্ত মো. আকিবুল ইসলাম আকিব জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুমারখালীর চড়াইকোল বোর্ড অফিসের পাশে মোটরসাইকেল ও ট্রাকের সাথে সংঘর্ষে আমেনা নামের এক গৃহবধূ ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছে। পরে নিহতের খাতুনের মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। কাভার্ডভ্যানটি টোলপ্লাজা এলাকা থেকে জব্দ করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :