মিনহাজুল আবেদীন: বাংলাদেশে দমকল বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিক থাকার কারণে সেখানে এতো বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে তারা ধারণা করছেন।
তারা বলছেন, ডিপোর কয়েকটি কন্টেইনারে অত্যন্ত দাহ্য এই রাসায়নিকটি ছিলো বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তারা বলছেন, একারণে সেখানে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটেছে যাতে এতো বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বিবিসি বাংলা
চট্টগ্রাম শহরের কাছে এই ডিপোতে শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা ঘটে যাতে রবিবার বিকেল পর্যন্ত অন্তত ৪৬ জন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দমকল বাহিনীর কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন। আহত হয়েছে আরো কয়েকশ মানুষ। কর্মকর্তারা বলছেন কারো কারো শরীর এমনভাবে পুড়ে গেছে যে তাদের চিহ্নিত করা কঠিন। হাসপাতালগুলো আহত লোকজনের উপচে পড়ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে হতাহতের সংখ্যা আরো অনেক বেড়ে যেতে পারে।
দমকল বাহিনীর পরিচালক লে. কর্নেল রেজাউল করিম বলেছেন, ডিপোতে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। শুধু একটা বিস্ফোরণ ছিলো না। কিছুক্ষণ পর পর থেকে থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। আগুন যখন একটা কন্টেইনার থেকে আরেকটা কন্টেইনারে গিয়ে লাগছিলো তখন একটা একটা করে বিস্ফোরণ হচ্ছিলো।
তিনি বলেন, এসব কন্টেইনার আগুনের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথেই সেগুলো বিস্ফোরিত হয়। তার মধ্যে কিছু বিস্ফোরণ ছিলো বড় আর কিছু ছোটখাটো।
কর্মকর্তারা বলছেন, এই ডিপোটি প্রায় ২৬ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে কয়েক হাজার কন্টেইনার ছিলো। এসব কন্টেইনারে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছাড়াও আরো কিছু রাসায়নিক ছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও সেখানে রপ্তানির জন্য গার্মেন্টসের তৈরি পোশাকও ছিলো।
তারা বলছেন, সীতাকুণ্ডের মতো শিল্প এলাকায় আগুন মোকাবেলার করার মতো প্রশিক্ষণ এবং যন্ত্র-সামগ্রী দমকল বাহিনীর রয়েছে। কিন্তু এই ডিপোতে যে রাসায়নিক-ভর্তি কন্টেইনার ছিলো দমকল বাহিনীর কর্মকর্তাদের সেটা জানা ছিল না।
রেজাউল করিম বলেন, তারা যখন আগুন নেভাচ্ছিলেন তখনই এসব বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে এবং তাতে প্রাথমিক যে দলটি সেখানে কাজ করছিলো তাদের কয়েকজন নিহত হন। আমরা যদি জানতে পারতাম যে এখানে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিক পদার্থ আছে তাহলে আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারতাম। রাসায়নিক বিশেষজ্ঞরা তাদের সরঞ্জাম নিয়ে আগেই সেখানে যেতে পারতো।
তিনি বলেন, সেখানে মালিক-পক্ষের কেউ কিম্বা কর্তৃপক্ষের কেউ ছিলেন না। তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারিনি এবং খোঁজ করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। সেকারণে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণে কারণে বাতাসে যে গ্যাস ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে তার কারণে স্থানীয় লোকজনের চোখ এবং ত্বকে জ্বালাপোড়া করছে। এটা অবশ্যই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। শুরুর দিকে আশেপাশে যারা ছিলেন তারা বেশি ভুগেছেন। সময়ের সাথে সাথে এর তীব্রতা কমে এসেছে। এখন ডিপোর আশেপাশের এলাকা নিরাপদ।
আপনার মতামত লিখুন :