শিরোনাম
◈ তিন পার্বত্য জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আইএসপিআর যা জানালো ◈ বিএনপির বিশৃঙ্খলা রোধে তারেক রহমানের যত ‘স্মার্ট অ্যাকশন’ ◈ ভারতে শেখ হাসিনা আশ্রয় পেতে যাচ্ছেন দালাই লামার মতোই! ◈ কর্মীদের হত্যাকাণ্ডের নিউজ কোথায়, প্রশ্ন আওয়ামী লীগের ◈ শাহবাগে বিক্ষোভ: আগামী ৭২ ঘণ্টায় পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা  ◈ পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ : রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি ◈ বাইতুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত বেশ কয়েকজন, সতর্ক অবস্থানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ (ভিডিও) ◈ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ◈ দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর আজ স্বাভাবিক দীঘিনালার পরিস্থিতি ◈ জাতিসংঘ অধিবেশনে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মুহাম্মদ ইউনূসের

প্রকাশিত : ২৯ জুলাই, ২০২২, ০৯:০৩ রাত
আপডেট : ৩১ জুলাই, ২০২২, ১২:৩৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গেটম্যান-ব্যারিকেড কিছুই ছিলো না: আহত যাত্রী ইমন

দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ইমন

মিনহাজুল আবেদীন: চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মাইক্রোবাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। ঘটনার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ব্যারিকেড ও গেটম্যানের লাল পতাকা উপেক্ষা করে চালক মাইক্রোবাস লাইনে তুলে দেয়ায় ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।  

তবে ভিন্ন তথ্য জানাচ্ছিলেন প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে। তাদের দাবি, দুর্ঘটনার সময় ক্রসিংয়ে ছিলেন না গেটম্যান। কেউ ব্যারিকেডও দেয়নি। জাগোনিউজ ২৪ 

রেল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের পাল্টাপাল্টি এমন বক্তব্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। তবে এবার প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরলেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মাইক্রোবাসের যাত্রী ইমন। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়াদের মধ্যে সবচেয়ে কম জখম হয়েছেন তিনি। শারীরিকভাবে ভালো থাকলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ইমন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৪ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

ইমন বলেন, ‘মাইক্রোবাসে আমরা সবাই গল্প-আড্ডায় ফিরছিলাম। ক্রসিংয়ে কোনো ব্যারিকেড ছিলো না। সেখানে গেটম্যানও ছিলেন না। মাইক্রোবাস যখন একেবারে লাইনের ওপর উঠে যায়, ঠিক তখন খুব জোরে ট্রেনের হুইসেল শুনতে পাই। মুহূর্তেই ট্রেন আমাদের মাইক্রোবাসে ধাক্কা দেয়। এরপর অনেক দূর পর্যন্ত ঠেলে নিয়ে যায়।’ ঢাকা পোস্ট 

তিনি বলেন, ‘যেদিক দিয়ে ট্রেন মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দিয়েছে, তার উল্টো দিকে জানালার পাশে ছিলাম আমি। ট্রেনের গতি যখন কমে যায়, অনেকটাই থেমে গেলে জানালা দিয়ে আমি বেরিয়ে আসি। এরপর আশপাশের লোকজন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।’

তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আমরা খৈয়াছড়ায় গিয়েছিলাম। দুপুরে ফিরে আসছিলাম। মাইক্রোবাসে আরএনজে কোচিং সেন্টারের ১৬ জন ছিলাম। এরমধ্যে ১২ জন শিক্ষার্থী এবং চারজন শিক্ষক ছিলেন। বাকি দুজনের মধ্যে একজন চালক, আরেকজন চালকের সহকরী ছিলেন। কাদের কী অবস্থা এখনো স্পষ্ট কিছুই জানি না।’

ইমনের বাবা আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে ইমন হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজারের জিয়াউর রহমান কলেজে পড়ালেখা করে। ও আরএনজে কোচিং পড়তো। স্যার ও বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলো।’ দেশ রূপান্তর 

২৪ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. নাজমুন নাহার বলেন, ‘দুপুর ২টার কিছু সময় পর ইমনকে হাসপাতালে আনা হয়। তার শরীরে যেসব জখম, তা খুব মাইনর (ছোট)। মাথার এক পাশে একটু কেটে গেছে, পায়ে আঘাত পেয়েছে। এগুলো আশঙ্কাজনক কিছু নয়। তবে ইমন মানসিকভাবে কিছুটা সমস্যায় আছে।’

তিনি বলেন, ‘ইমনের পর আরো চারজনকে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছিলো। তাদের মাথায় ও শরীরে গুরুতর আঘাত থাকায় নিউরোসার্জন বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে।’

শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে খৈয়াছড়া এলাকায় একটি রেলক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ইমনের সঙ্গে থাকা ১১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো সাতজন। তাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাংলানিউজ ২৪ 

দুর্ঘটনার পর প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনছার আলী জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসছিলো ‘মহানগর প্রভাতী’ এক্সপ্রেস। খৈয়াছড়া এলাকায় একটি লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস লাইনে উঠে পড়ে। সংঘর্ষের পর মাইক্রোবাসটি ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে আটকে যায়। ওই অবস্থায় মাইক্রোবাসটিকে বেশ খানিকটা পথ ছেঁচড়ে নিয়ে থামে ট্রেন।

সেসময় রেল কর্মকর্তা আনছার দাবি করেন, ‘ট্রেন আসায় সিগন্যাল পেয়ে গেটম্যান সাদ্দাম বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড দিয়েছিলেন। কিন্তু মাইক্রোবাসটি বাঁশ ঠেলে ক্রসিংয়ে উঠে পড়ে।’

পরে পূর্বাঞ্চল বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী দাবি করেন, ‘ঘটনার সময় গেটম্যান উপস্থিত ছিলেন। তিনি বার বার লাল পতাকা উঁচিয়ে তাদের বারণ করলেও মাইক্রোচালক শোনেননি। তার অবহেলার কারণেই এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

তবে প্রত্যক্ষদর্শী মফিজুল হক দাবি করেন, দুর্ঘটনার সময় সেখানে কোনো গেইটম্যান ছিলেন না। তিনি জুমার নামাজ আদায়ে মসজিদে গিয়েছিলেন। ইত্তেফাক 

গেটম্যান সাদ্দাম আটক, তদন্ত কমিটি গঠন

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শুরুতে মাইক্রোবাসের চালক ‘দায়ী’ দাবি করলেও বিকেল ৬টার দিকে গেটম্যান সাদ্দামকে আটক করেছে রেলওয়ে পুলিশ। চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে ট্রেন দুর্ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) মো. আনছার আলীকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- রেলের বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী-১ আবদুল হামিদ, বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো) জাহিদ হাসান, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট রেজানুর রহমান ও বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার (ডিএমও) মো. আনোয়ার হোসেন। নিউজবাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়