মহিব আল হাসান : বাংলা সিনেমায় অশ্লীলতার শুরুটা নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে এসে। মূলত বাংলা চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার জন্য পঞ্চাশ ভাগ দায়ি করা হয় চিত্রনায়িকা শাবানাকে। চিত্রনায়িকা শাবানার প্রযোজিত সিনেমা ‘স্বামী কেন আসামী’ সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই ছবিতে অভিষেক হয় ওপার বাংলার নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের।বাংলা ছবিতে ওয়েস্টার্ণ মডেলের কাপড় (অর্ধনগ্ন পোষাকে ) পড়িয়ে চাঙ্কি পান্ডের বিপরীতে অভিনয় করেন এ নায়িকা। এ ছবিতে শাবানার সাথে জুটি বেঁধে কাজ করেন প্রয়াত নায়ক জসিম। সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর সুপার ডুপারহিট করে।
অর্ধনগ্ন পোষাক পড়ে সিনেমা সুপার-ডুপার হিট হওয়ার কারণে দেশিয় চলচ্চিত্রের প্রযোজক পরিচালকরা ছোট পোষাক সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেয় বাংলা চলচ্চিত্রের সেসময়ের জনপ্রিয় নায়িকাদের। তারা এমন পোশাক পড়ে অভিনয় করবেন না জানিয়ে দিলে ১৯৯৭ সালে এহতেসাম এর হাত ধরে আসা মুনমুনকে নিয়ে ছোট পোষাকে সিনেমায় কাজ করার অফার দিলে সহজে রাজী হয়ে যায় তিনি। পোষাকের বাহিরেও রাতে অন্যভাবে শুটিং করা হত তাদের ডামি বানিয়ে। সিনেমায় ব্যবসায় লাভবান হওয়া শুরু করলেন প্রযোজক-পরিচালকরা।
সিনেমা নির্মাণ হতে থাকে, নিষিদ্ধ নারী,‘মহিলা হোস্টেল,‘খল নায়িকা’, ‘পাল্টা হামলা’, ‘লোহার শিকল’, ‘মরণ নিশান’, ‘বাহাদুর সন্তান’, ‘যুদ্ধে যাবো’, ‘কসম বাংলার মাটি’ রুখে দাড়াও’, ‘লালু কসাই’, ‘ধর শয়তান’, ‘ভাড়াটে খুনি’, ‘নষ্ট ছাত্র’। এসব সিনেমা ঢাকাই সিনেমার অশ্লীলতা সৃষ্টি করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা বলেন, ‘আমাদের দেশের ঢাকাই সিনেমার অশ্লীলতা শুরু হয় ঋতুপর্ণার মাধ্যমে। ঋতুপর্ণা বাংলাদেশে আসেন শাবানার হাত ধরে তাই এই অশ্লীলতার জন্যও তিনিও দায়ী। ’
ঋতুপর্ণাকে নিয়ে নির্মাতা আরও বলেন, চলাচ্চিত্রের ছোট পোষাক নিয়ে এসেছেন তিনি। যখন কলকাতায় তার সম্মানী ছিল মাত্র ৫০হাজার টাকা। সেসময় তাকে শাবান বাংলাদেশের ছবিতে ৩লাখ দিয়ে এনে সিনেমায় কাজ শুরু করান। তখন থেকে ঢাকাই সিনেমার পর্দায় এমন অশ্লীলতার শুরুটা হয়। হলে পরিবারসহ সিনেমা দেখা এক পর্যায় বিলিন হয়ে যায়। এভাবে ঢাকাই সিনেমায় অশ্লীলতার আর্বিভাব ঘটে।
চলচ্চিত্র বোদ্ধারা বলছেন, মানুষেরা অন্যের দেখে দেখে শুনে কাজটা করার চেষ্টা করে। আর সেই ধারার মাধ্যমে সিনেমার অশ্লীতার জোয়ার শুরু করে প্রযোজকরা -পরিচালক । আর শাবানা যখন সিনেমা করবেন না ঘোষণা দেন তখন তার অগনিত দর্শকরা সিনেমা দেখতে যাওয়া বন্ধ করে। সেদিক থেকে বলতে গেলে শাবানাও এই ইন্ডাস্ট্রির ক্ষতি করে যান।
তবে বর্তমানে সিনেমায় অশ্লীলতা নেই। এখন প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। দেশে ভালো মানের সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে। অচিরেই সিনেমার অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে মনে করছেন তারা চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা।
আপনার মতামত লিখুন :